Friday 21 January 2022

প্রেমের সাতকাহন


           খুব পুরোন হয়নি সেই সব দিনে

         দুপুরের গলিটা কাক ডেকে ডেকে ক্লান্ত হত যখন

     পৃথিবী তখন দিনের বাস্ততা থেকে একটুকরো নিয়ে

 জানলার আমগাছের ছায়াটা যে অন্ধকারের হাতছানি দিত

ঐখানে চুপটি করে জিরিয়ে নিত একপ্রস্থ

  তারপর বিকেল হওয়ার নামে কখন সখনও সকাল হত

    বাড়ির থেকে একমুঠো ভীতু চোখেরা আলতো দরজা ঠেলে

         ইচ্ছে গুলো নিয়ে বেরিয়ে আসতে একরত্তি স্বপ্নকে আঁচলে ভরে

             তারপর আলতো দুটো পা- পিঠ অব্দি  কালো চুলের পাঁচিল

                  নিয়ে সে গিয়ে খোঁচা দিত পাশের বাড়ির জানলায়,

                      আর ফিসফিসিয়ে নামধরে ডাকতো যেন কাকে!

                           সে সব দিনে  আমি diary লিখে কাটাতাম

           তারপর দিনকে হাতঘড়ি করে মেয়েটি বড় হলো

        কথা বলতো যেন পৃথিৱীতে আমাদের বোবা হলেই চলত বেশ

    সবকথাদের একটা প্রচ্ছন্ন ইচ্ছে থাকতো 

    ওর মুখ দিয়ে বলতে চাওয়ার

   ওই দিনগুলো আমারও তেমন করে মনে নেই

  নামগুলোও কেমন যেন জটপাকিয়ে গেছে

পুরোনো ইতিহাসে লেখা নেই সেসব আর,

  চটজলদির ভিড়ে সেসব সাফ হয়ে গেছে


   দেখা হলো আবার অনেক বছর

     সেই ছোটকালের আবছায়া সব কথায়

      বেশ চেনা ঠেকেছে ,আগের সেই দিনগুলি

       রোজকার ডাইরির পাতা,জানালা,ছায়ানা

         কোথায় যেন দেখেছি….খুব চেনা!

         একদিন বাবার সাথে হাত ধরে মেলায় গিয়ে

           একেই তো দেখেছিলাম!

             বেলুন আর পুতুল নিয়ে বায়না করেও শেষে

              চোখের জল নিয়ে ফিরে  যাওয়া সেই  মেয়েটি!

                                      

           …ওরা ছেড়ে দিলো আমাদের পুরাতন পাড়ার বাড়িটা

         রোজ জানলা দিয়ে যাকে দেখবো বলে

       দুপুর বিকেল এক করে সন্ধ্যা নামাতো যে ছেলেটি,

     আজ সেই মেয়েটি আবারচোখের সমস্ত দৃষ্টি জুড়ে

   ছোটবেলায় কি ছিল জানানেই !

তবে আজ কেমন  হচ্ছে মনের ভেতর

 তাকাতে পারলোনা বেশিক্ষন

  কাছাকাছি এলে পরে..

    ভালোলাগার জানলাটা যায় খুলে

     যেন হুড়মুড়িয়ে বাতাস এলো, সাথে সেই আমের দুপুর

        ফিসফিসিয়ে কথা বলা রেলিঙের সবটুকু

         দৌড়ে গিয়ে সে তার ছোটবেলাকার ডায়রী নিয়ে

           পাগল করে দেখল-খুঁজল-পড়ল

             কিন্তু কোথায় সেই লেখা!একবার জিজ্ঞেস করলে হতো না?

                   - মেয়েটি সেই কিনা?


               কথায় কথায় বাবা বললেন,ওদের কথা

             ডায়রীটা আছে মায়ের আলমারিতে

           মা পড়তেন আমার কাঁচা হাতের অক্ষরে লেখা diary

         আর মাঝে মাঝে আমাকে অবাক করে কাউকে দিয়ে ,

     গল্পের বই অনিয়ে উপহার দিতেন

আমিও জমিয়ে লিখতাম

আজ আবার সেই ডায়রী খুঁজলাম যখন

 মা কেমন একটা অদ্ভুত হাসি হাসলেনতারপর

  বললেন, জানতাম..একদিন তুই চাইবি এগুলো

   তাই রেখেছি যত্ন করে লাল কাপড়ে মুড়ে

    তর সইলো না সবকটা পড়লাম

     একনিঃশ্বাসে  সেই পুরোনো খাটের ওপর এলিয়ে

     তারপর ওটা রেখে দিলেম পাশে

      মন ভরে খিলখিলিয়ে হাসলাম

        কি না লিখেছি-ভেবেছি-হাবিজাবি সব

     তারপর হাওয়া দিতে একটু একটু করে চোখের পাতাভারি হয়ে এলো

    সেই হারানো বিকেলের  গল্পের আসার মুহুরত গুলো                                                                          অনুভব করলাম অবচেতনে


     তারপর আর কী..!..দিন পেরিয়ে যাচ্ছে হুস হুস করে

        পাল্লা দিয়ে নাবলা প্রেম..

         যে প্রেম কোনো দিন প্রেমিকার কথা শোনেনি বা

        একটা বাক্যও বলতে গিয়ে আটকে গেছে ঠোঁটে,

তারা ভেতরে ভেতরে প্রেমের সাম্রাজ্য গড়ে....



No comments:

Post a Comment