বন্য অরণ্য, অন্য অরণ্য
কাছে পিঠে যে গুটিকতক অরণ্য এখনো বেঁচে আছে সে অরণ্য বন্য অরণ্য, স্বভাব - অরণ্য। সে অরণ্যের গর্ভমন্দির শাল-পিয়াল- পলাশ-শিমুল-কেঁদ আর ঝোঁপ-ঝাঁটি জঙ্গলের রহস্য দিয়ে বোনা। সে অরণ্যের গাছপালা হাতি ঠাকুরের লজ্জা নিবারণ - ক্লান্তি হরণ স্থল। বিপন্নতার মাঝে অপার আশ্রয়স্থল। সে অরণ্যের মানুষ লাজুক, পাতার আড়ালে তারা মুখ লুকায়। অরণ্য বিনা তারা বাঁচে না। হাতিদের পরিক্রমণ পথে সেসব মানুষেরা ছিল। তাদের অস্তিত্ব অরণ্যের মতোই অপরিবর্তনশীল। তাই তাদের আদিম গন্ধ হাতিরা বোঝে। তাই ওরা আসে। ওদের রক্তে ওদের পথচিহ্ন খোদাই করা থাকে। ওরা ভোলে না। সেই এক পথ। সেই এক সময়। আদিম অরণ্যদেবী ঐরাবত সদৃশ গজ পৃষ্ঠে বিহার করতে করতে অনার্য সভ্যতার মহাকালের পৃষ্ঠা এভাবেই উল্টিয়ে চলেছেন।
এর বাইরে এক ধরনের অরণ্য বর্তমান। যেখানে ফরেস্টাররা বাঁচে। আর সে অরণ্য নিজে সরকারি অনুপ্রেনায় বাঁচে। সে অরণ্য সামাজিক অরণ্য। ইউক্যালিপটাশ, আকাশমনি দিয়ে যার রচনা। সে অরণ্যের বুকে, কালো পিচগলা রাস্তা বেয়ে আদিম অরণ্যের লাশ চলে যায় ট্রাকে বোঝাই হয়ে। সে আরণ্যের মানুষ হাতি ঠাকুরের জন্যে তার বিছায়। তাদের দেহ থেকে হিংসার গন্ধ ছড়ায়। তারা বহিরাগত। আদিম আরন্যকার সন্তান তারা নয়।